কর্পোরেশনের ঋণ মঞ্জুরী ও বিতরণ পদ্ধতি এবং যে সকল দলিলপত্র দাখিল করতে হবে, তা নিম্নে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রয়োজনবোধে বিএইচ.বি.এফ.সি এর সদর দফতর ঋণ বিভাগে বা সংশি-ষ্ট জোনাল ও রিজিওনাল অফিস হতে ঋণ বিষয়ে পরামর্শ গ্রহণ করা যেতে পারে। কর্পোরেশন এর ঋণ পরিশোধ নিয়মাবলী অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তুলনায় কিছুটা ভিন্নতর বিধায় ঋণ গ্রহণের পূর্বে সকল গ্রহীতাকে ঋণের মাসিক কিস্তি এবং পরিশোধ পদ্ধতি সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গঁ তথ্য জেনে নিয়ে ঋণ আবেদন করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
২.০ ঋণের প্রকার:
কর্পোরেশন বর্তমানে নিম্নোক্ত ৭ রকম (Type) এর গৃহ ঋণ দিয়ে থাকে:
২.১ সাধারণ ঋণ: একক ব্যক্তির বা স্বামী ও সএীর যৌথ নামে প্রদত্ত ঋণ;
২.২ গ্রুপ ঋণ: একাধিক ব্যক্তির মালিকানাধীন প্লটে ফ্ল্যাট/ইউনিট ভিত্তিক প্রত্যেককে আলাদা আলাদা ঋণ হিসাব নম্বরে প্রদত্ত ঋণ;
২.৩ ফ্ল্যাট/এপার্টমেন্ট ঋণ: নির্মীয়মান ফ্ল্যাট/এপার্টমেন্ট কেনার জন্য ঋণ;
২.৪ বর্ধিত ঋণ: অনুমোদিত নকশার মুল ঋণে নির্মিত অংশ বাদে অনির্মিত অংশ নির্মাণের জন্য প্রদত্ত ঋণ;
২.৫ মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত স্কীমের ঋণ: মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণীর জন্য ৫৫০ হতে ১০০০ বর্গফুট আয়তনের ইউনিট বিশিষ্ট বাড়ী নির্মাণ/ফ্ল্যাট ক্রয় ও জমির একাধিক মালিকের ক্ষেত্রে গ্রুপ ভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য প্রদত্ত ঋণ;
২.৬ সেমি পাকা বাড়ীর জন্য ঋণ: ঢাকা ও চট্রগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকা ও বিভাগীয় সদর ব্যতীত অন্যান্য জেলা, উপজেলা সদর এবং তৎসংলগ্ন সম্ভাবনাময় গ্রোথ সেন্টার/ বাণিজ্যিক স্থান সমূহে সেমি পাকাবাড়ীর নির্মাণের জন্য প্রদত্ত ঋণ;
২.৭ স্বল্প মেয়াদী বিশেষ ঋণ: অনুমোদিত নক্শা মোতাবেক বাড়ী / দালানের নির্মাণ কাজ আরম্ভ করে নির্মাণ কাজ শেষ/ ফিনিশিং পর্যায়ে এনেছেন শুধুমাত্র তাদের দালানের অসম্পূর্ণ নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য প্রদত্ত ঋণ।
৩.০ ঋণ কার্যক্রমের এলাকা: দেশের সকল বিভাগীয়, জেলাসদর, উপজেলা সদর ও সম্ভাবনাময় গ্রোথ সেন্টার/ বানিজ্যিক গুরুত্বপুর্ণ স্থানসমূহে কর্পোরেশনের ঋণ কার্যক্রম চালু রয়েছে।
৬.০ ঋণ প্রাপ্তির যোগ্যতা: বাংলাদেশের সকল সুস্থ্য/স্বাভাবিক নাগরিক কর্পোরেশনের ঋণ প্রাপ্তির যোগ্য হবেন। একই পরিবারের মধ্যে একাধিক ঋণ প্রদান করা হবে না (পরিবার বলতে স্বামী ও সএী এবং তাদের উপর নির্ভরশীল ছেলে মেয়েদের বোঝাবে)। শুধুমাত্র পরিবারের একজন সদস্যের নামে ঋণ আবেদন করা যাবে। কর্পোরেশন থেকে পূর্বে কোন ঋণ নিয়ে থাকলে পূর্বের ঋণ সম্পূর্ণ পরিশোধ না হওয়া পর্যমত ঐ পরিবারের অন্য কোন সদস্য ঋণের আবেদন করতে পারবে না। স্বামী সএীর ক্ষেত্রে একক নামে বা যৌথ নামে শুধুমাত্র একটি ঋণ দেয়া হবে। যৌথ নামে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে স্বামী, সএীর মধ্যে যে কোন একজনের নিজস্ব আয় থাকলে চলবে। সাধারণত নাবালকের নামে কোন ঋণ মঞ্জুর করা যাবে না। তবে নাবালকের পক্ষে স্বাভাবিক বা আইনগত অভিভাবক জামিনদার হলে এবং অভিভাবক হিসাবে নাবালকের পক্ষে সকল দলিলপত্রে স্বাক্ষর করলে ঋণ দেয়া যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে অভিভাবককে আলাদা ঋণ দেয়া হবে না।
৭.০ একই শহরে যাদের বসবাসের নিজস্ব বাড়ী আছে তাদের নতুন বাড়ী নির্মানের জন্য ঋণ বিবেচনা করা হবে না। প্রস্তাবিত বন্ধকী জমিতে অনুমোদিত নক্শা অনুযায়ী ইতিমধ্যে নির্মিত বাড়ীর ( যদি থাকে ) অবশিষ্ট অংশ ( ভার্টিক্যালী, অথবা হরিজেন্টালী) নির্মাণ / সম্প্রসারনের জন্য প্রচলিত বিবি মোতাবেক ঋণ বিবেচনা করা যাবে এবং ঋণ সুপারিশ করার সময় নির্মিত অংশের সম্ভাব্য ভাড়ার ৯০% টাকাকে পরিশোধযোগ্য আয় হিসাবে গ্রহণ করে ঋণের প্রাপ্যতা নিরুপন করা হবে।
৮.০ ঋণ আবেদন পত্র দাখিল সংক্রামত:
৮.১ ঋণ আবেদনকারীকে প্রথমে প্লানের ১টি কপিসহ কর্পোরেশনের নির্ধারিত ফরমে (বিনা মুল্যের ফরম) প্রাথমিক আবেদন করতে হবে। পরিদর্শনের পর ফরমাল আবেদন অনুমোদন দেয়া হবে।
৮.২ ফরমাল আবেদনের ক্ষেত্রে ঋণ আবেদনকারীকে কর্পোরেশনের নির্ধারিত ফরমে ( প্রতিটি ঋণ আবেদন ফরম ৫০০/- টাকা মূল্যে সংশ্লিষ্ট জোনাল ও রিজিওনাল অফিস হতে পাওয়া যায়) নিম্নবর্ণিত দলিলপত্রসহ সংশ্লিষ্ট জোনাল ও রিজিওনাল অফিসে আবেদন দাখিল করতে হয়।
৮.৩ বেসরকারী/ ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির ক্ষেত্রে ঋণ আবেদনপত্রের সঙ্গে নিম্নেবর্ণিত দলিলপত্র দাখিল করতে হবে:
৮.৩.১ আবেদনকারীর মূল মালিকানা দলিল ( সাফ-কবলা/ দানপত্র / বন্টননামা) এবং উক্ত দলিল এর একটি সত্যায়িত ফটোকপি (১ম শ্রেণীর গেজেটেড অফিসার কর্তৃক সত্যায়িত)। তবে আবেদনের পূর্বে মূল দলিল রেজিঃ অফিস থেকে পাওয়া না গেলে দলিল উঠানোর ক্ষমতা প্রদানসহ দলিল উঠানোর মূল রশিদ ও দলিল তোলার ফি বাবদ ২০০/- টাকা এবং দলিলের একখানা সার্টিফাইড কপি;
৮.৩.২ সি.এস, এস.এ, আর.এস ও সিটি জরীপ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি;
৮.৩.৩ নামজারী খতিয়ানসহ ডি.সি.আর ও হালসন নাগাদ খাজনার রশিদ;
৮.৩.৪ এস.এ / আর.এস রেকর্ডীয় মালিক থেকে স্বত্বের ধারাবাহিকতা প্রমাণের জন্য চেইন অব ডকুমেন্টস এর সত্যায়িত ফটোকপি;
৮.৩.৫ সাব রেজিষ্ট্রার / জেলা রেজিষ্ট্রারের অফিস থেকে ঋণ আবেদনের পুর্ববর্তী ১২(বার) বছরের তল্লাশিসহ নির্দায় সার্টিফিকেট (এন.ই.সি );
৮.৩.৬ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নির্মিতব্য বাড়ীর নক্শার অনুমোদন পত্রসহ দুই কপি অনুমোদিত নক্শা;
৮.৩.৭ ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনসিটির বেলায় সংশ্লিষ্ট প্লটের সয়েলটেষ্ট রিপোর্ট। সয়েলটেষ্ট রিপোর্টে সংশ্লিষ্ট স্নাতক প্রকৌশলী (বি.এস.সি সিভিল ইঞ্জিনিয়ার) এর স্বাক্ষর থাকতে হবে।
৮.৩.৮ বহুতল ভবনের জন্য ২ কপি কাঠামো নকশা ( ষ্ট্রাকচারাল ডিজাইজন )। ৬ তলা পর্যমত কমপক্ষে ৫(পাঁচ) বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন গ্রাজুয়েট সিভিল ইঞ্জিনিয়ার / প্রকৌশল পরামর্শ দাতা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত নির্ধারিত ছকে ইমারতের ভারবহন ক্ষমতা সংক্রামত সাটিফিকেট (সার্টিফিকেট প্রদানকারী প্রকৌশলীকে অবশ্যই ইনষ্টিটিউশন অফ ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ সদস্য হতে হবে )। ৭তলা ও তদুর্ধ ভবনের বেলায় ১০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন গ্রাজুয়েট সিভিল ইঞ্জিনিয়ার/ প্রকৌশল পরামর্শ দাতা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত নির্ধারিত ছকে ইমারতের ভারবহন সংক্রামত সার্টিফিকেট ( সার্টিফিকেট প্রদানকারী প্রকৌশলীকে অবশ্যই ইনষ্টিটিউশন অফ ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ এর সদস্য হতে হবে)।
৮.৩.৯ প্রস্তাবিত নির্মাণ স্থানে যাওয়ার রাস্তার বিবরণসহ আশে পাশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নাম উল্লেখ পূর্বক ট্রেসিং পেপারে ২ কপি হাতে অাঁকা রুট ম্যাপ ( আবেদনকারীর স্বাক্ষর সম্বলিত );
৮.৩.১০ সাদা কাগজে আবেদনকারীর ৩টি সত্যায়িত নমুনা স্বাক্ষর এবং ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি;
৮.৩.১১ দরখাস্ত ফি জমা প্রদানের রশিদ প্রতি হাজারে ৩/- টাকা হারে (সোনালী ও ন্যাশনাল ব্যাংকের নির্দিষ্ট শাখায় এবং বিএইচবিএফসি ভবনের নীচতলায় জনতা ব্যাংকে কর্পোরেশনের নির্ধারিত ফর্মে ফি’র টাকা জমা প্রদান করা যায়। এ ছাড়াও কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট জোনাল ও রিজিওনাল অফিসে জমা করা যায়)।
৮.৩.১২ আবেদনকারীর আয়ের প্রমাণপত্র ও চাকুরীর ক্ষেত্রে ঋণ আবেদন ফর্মের নির্দিষ্ট পাতায় বেতন সনদ এবং ব্যবসার ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স ও আয় সম্পর্কে হলফনামা। আয়কর পরিশোধযোগ্য আয় হলে টি.আই.এন (TIN) নম্বরসহ আয়কর প্রত্যায়নপত্র / আয়কর পরিশোধ সনদের সার্টিফাইড কপি; আবেদনকারী বিদেশে কর্মরত থাকলে তার আবেদনপত্র, ছবি ও আয়ের সনদপত্র সংশ্লিষ্ট দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক সত্যায়ন পূর্বক ঢাকাস্থ পররাষ্ট্র মমএনালয় হতে প্রতিস্বাক্ষরিত/ প্রমানিকরণ করিয়ে জমা দিতে হবে।
৮.৩.১৩ দরখাস্তকারীর নিজস্ব আয় না থাকলে স্বামী/স্ত্রী / ছেলে/ মেয়েকে জামিনদার করা যায়। এরূপ ক্ষেত্রে কর্পোরেশনের নির্ধারিত জামিনদারের প্রশ্নপত্র ফরম পূরণ করে দাখিল করতে হবে এবং জামিনদারের আয়ের স্বপক্ষে দালিলিক প্রমাণ দাখিল করতে হবে।
৮.৩.১৪ কর্পোরেশনের দেয়া নমুনা অনুযায়ী অনুমোদিত নক্শা মোতাবেক বাড়ী নির্মাণ করবেন এবং কর্পোরেশন বা অন্য কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে ঋণ নিয়ে বাড়ী নির্মাণ করেন নাই; তাছাড়া ঋণ আবেদনকারী নিজের/ নিজেদের এবং তার/তাদের পরিবারবর্গের জন্য যৌতুক নিবেন না বা যৌতুক দিবেন না মর্মে উপযুক্ত মুল্যমানের নন-জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে ঘোষনা পত্র দিতে হবে ।
৮.৪ সরকার/ জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ/( পূর্বের হাউজিং সেটেলমেন্ট )/ রাজউক/ সি.ডি.এ/কে.ডি.এ/ আর.ডি.এ/ ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড/ হাউজিং সোসাইটি(সরকার থেকে বরাদ্দকৃত জমির ক্ষেত্রে নিম্নরূপ দলিলপত্র দাখিল করতে হবে:
৮.৪.১ মূল বরাদ্দপত্র ( এলটমেন্ট লেটার ) যদি থাকে;
৮.৪.২ দখল হস্তামতর পত্র ( পজেশন লেটার ) যদি থাকে;
৮.৪.৩ মূল লীজ দলিল ও এর একটি সত্যায়িত ফটোকপি (১ম শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তা কর্তৃক সত্যায়িত); আবেদনের পুর্বে মূল দলিল রেজিষ্ট্রি অফিস থেকে পাওয়া না গেলে মূল দলিল উঠানোর রশিদ এবং দলিল উঠানোর জন্য ২০০/- টাকা ফি প্রদান ও দলিলের একটি সার্টিফাইড কপি;
৮.৪.৪ মূল এলোটির কাছ থেকে হস্তামতর মূলে জমির মালিক হলে মুল মালিকানা দলিল এবং বরাদ্দকারী কর্তৃপক্ষের অফিসে নামজারীর কাগজপত্র;
৮.৪.৫ কর্পোরেশনের নিকট জমি বন্ধক রাখার জন্য লীজ দাতা প্রতিষ্ঠান থেকে বন্ধক অনুমতিপত্র/ অনাপত্তি পত্র (এন.ও.সি); এছাড়াও ৮.৩.৬ থেকে ৮.৩.১৪ অনুচ্ছেদে উলে-খিত প্রকৌশলগত কাগজপত্র এবং আবেদনকারীর আয় সংক্রামত কাগজপত্র ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাগজপত্র;
৯.০ গ্রুপ ঋণের ক্ষেত্রে আরও যে সমস্ত দলিল দাখিল করতে হবে:
৯.১ কর্পোরেশনের নমুনা মোতাবেক ফ্ল্যাট/ইউনিট ভিত্তিক মালিকানা নির্ধারণ করে ফ্ল্যাট বন্টনের রেজিষ্টার্ড চুক্তিনামা দলিল এবং উক্ত দলিলের একটি সত্যায়িত ফটোকপি (১ম শ্রেণীর গেজেটেড অফিসার কর্তৃক সত্যায়িত);
৯.২ আবেদনের পুর্বে উপরে বর্ণিত ফ্ল্যাট বন্টনের মূল এগ্রিমেন্ট দলিল রেজিষ্ট্রি অফিস থেকে পাওয়া না গেলে এগ্রিমেন্ট দলিল তোলার মুল রশিদ এবং দলিল উঠানোর জন্য ২০০/- টাকা জমা ও দলিলের একটি সার্টিফাইড কপি দাখিল করতে হবে।
১০.০ অন্যান্য তথ্যঃ
১০.১ ঋণ মঞ্জুরী ত্বরান্বিত করার নিমিত্ত ঋণ দরখাস্তের সাথে সকল প্রয়োজনীয় দলিলসমূহ দাখিল করা অপরিহার্য। আবেদনকারী প্রয়োজনবোধে কর্পোরেশন ভবনে অবস্থিত ঋণ বিভাগে বা সংশ্লিষ্ট জোন/ রিজিওন এর কাউসিলিং কাউন্টারে পরামর্শ গ্রহণ করতে পারবেন।
১০.২ আবেদনপত্র সঠিক পাওয়া গেলে এবং প্রয়োজনীয় দলিলাদি আবেদনের সময় দাখিল করা হলে সরকার থেকে সরাসরি লীজপ্রাপ্ত জমির ক্ষেত্রে ২০দিন এবং ব্যওিু মালিকানাধীন জমির ( প্রাইভেট ল্যান্ড) এর ক্ষেত্রে ২৫ দিনের মধ্যে ঋণ মঞ্জুরীর ব্যবস্থা নেয়া হয়ে থাকে।
১১.০ ঋণ মঞ্জুরীর পর করণীয়:
১১.১ নির্মিতব্য ইমারতের প্রাক্কলিত ব্যয়ের কমপক্ষে ২০% বা তার বেশী অথবা নির্মাণ ব্যয় এবং মঞ্জুরীকৃত টাকার পার্থক্যের যা বেশী ঋণ আবেদনকারীকে প্রথম কিস্তি গ্রহণের পূর্বে নির্মাণ কাজে বিনিয়োগ করতে হবে।
১১.২ রেহেন দলিলের মূল্য বাবদ প্রতি কপি ১০০/- (একশত ) টাকা হিসাবে ঢাকার জন্য জনতা ব্যাংক, পুরানা পল্টন শাখাসহ সংশ্লিষ্ট অফিস হতে সরবরাহ করা হয়।
১১.৩ রেহেন দলিলের রেজিষ্ট্রেশনের যাবতীয় ব্যয় ঋণ গ্রহীতাকে বহন করতে হবে।
১১.৪ আবেদনকারীর ঋণের জামিনদার থেকে থাকলে জামিনদারকে ২০০/- (দুইশত) টাকা অথবা সরকার কর্তৃক ধার্যকৃত মূল্যমানের বিশেষ আঠাযুক্ত ষ্ট্যাম্প (স্পেশাল এডহেসিভ ষ্ট্যাম্পে) যুক্ত করে কর্পোরেশনের নির্ধারিত ফরমে ( জামিননামা ও জামিনদার প্রশ্নপত্র ফরম ১০০/ টাকা মূল্যে ঢাকায় কর্পোরেশন ভবনস্থ জনতা ব্যাংক, পুরানা পল্টন শাখায় এবং অন্যান্য স্থানে কর্পোরেশনের অফিস সমূহে পাওয়া যায় ) প্রথম কিস্তি গ্রহণের পূর্বে লেটার অব গ্যারান্টি প্রদান করতে হবে।
১২.০ ঋণের কিস্তি বিতরণের পদ্ধতি:
১২.১ নির্মাণ কাজের সাথে সংগতি রেখে মঞ্জুরীকৃত টাকা মঞ্জুরীপত্রে উলে-খিত মতে ৬/৭টি চেকে প্রদান করা হয়ে থাকে। প্রসঙ্গত: উলে-খ্য মঞ্জুরীপত্র ইস্যুর তারিখ হতে ৬ মাসের মধ্যে মঞ্জুরীপত্রে উল্লেখিত প্রাথমিক বিনিয়োগের নির্মাণ কাজ সমাপ্তির পর প্রথম কিস্তির চেক গ্রহণ করতে হয়। উক্ত সময়ের মধ্যে ১ম কিস্তি গ্রহণ করতে ব্যর্থ হলে মঞ্জুরী বাতিল হয়ে যেতে পারে। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে লিখিত আবেদনসহ নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে আরো ১৮ মাস পর্যমত (সর্বমোট) সময় বাড়ানোর সুযোগ আছে।
১২.২ গ্রহিতার নিজস্ব প্রাথমিক বিনিয়োগ সম্পন্ন হওয়ার পর বন্ধক দলিল রেজিষ্ট্রেশন করে ঋণের ১ম কিস্তির চেক বিতরণ করা হয়। পরবর্তী চেকসমুহ মঞ্জুরীপত্রে উলে-খিত মতে একাধিক চেকের মাধ্যমে কয়েক কিস্তিতে ঋণ প্রদান করা হয়। পরবর্তী কিস্তি সমূহের চেক, নির্মাণ কাজে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করার পর পূর্ববর্তী চেক গ্রহণের ২ মাসের মধ্যে গ্রহণ রতে হয়।
১২.৩ ঋণের টাকার সকল কিস্তির চেক সংশ্লিষ্ট জোনাল ও রিজিওনাল অফিস থেকে ইস্যু করা হয়।
১৩.০ হিসাব সংরক্ষণ:
১৩.১ প্রতিটি ঋণ কেইসের টাকা লেনদেনের হিসাব সংশ্লিষ্ট রিজিওনাল ও জোনাল অফিসে সংরক্ষণ করা হয়।
১৩.২ ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে লিগ্যাল নোটিশ জারী, মামলা দায়ের এবং অন্য যে কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের যাবতীয় খরচাদি ঋণ গ্রহিতাকে বহন করতে হয় জন্য উক্ত খরচ তাৎক্ষণিকভাবে ঋণ হিসাবে ডেবিট করা হয়।
১৪.০ ঋণ পরিশোধ ও অবমুক্তি ( রিডেম্পশান ):
নিয়মিত মাসিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করা যায়। এছাড়াও পরিশোধের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বেও কর্পোরেশনের সমুদয় ঋণ পরিশোধ করা যায়। যে তারিখে সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধ করা হবে তার পূর্ব দিন পর্যমত আসল বাবদ প্রাপ্য টাকার উপর সুদ দিতে হয়। সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধের পর জমাকৃত দলিলাদি গ্রহিতাকে ফেরত দেয়া হয়। ঋণ অবমুক্তি ( রিডেম্পশান ) রেজিষ্ট্রি দলিলের মাধ্যমে করতে হলে এর ব্যয় ঋণ গ্রহিতাকে বহন করতে হয়।
সতর্কীকরণঃ
১৫.০ কর্পোরেশনের নিকট হতে ঋণ গ্রহণের উদ্দেশ্যে অথবা কোন জামানত গ্রহণের প্রবৃত্ত করার উদ্দেশ্যে কেহ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মিথ্যা বিবরণ দিলে কিংবা জ্ঞাতসারে কোন মিথ্যা বিবরণ ব্যবহার করলে, ১৯৭৩ সালের বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইনান্স কর্পোরেশনের আদেশের ( রাষ্ট্রপতির ১৯৭৩ সালের ৭ নম্বর আদেশ ) ৩৫(১) ধারা মোতাবেক দু'বছর পর্যমত কারাদন্ড অথবা দু'হাজার টাকা জরিমানা অথবা, উভয়দন্ডে দন্ডনীয় হবেন।
১৬.০ কর্পোরেশনের বিভিন্ন বিক্রয়যোগ্য ফরমের মূল্য তালিকা এবং ব্যাংক মেমো বই সংগ্রহের নিয়ম।
ক্রমিক নং |
বিবরণ |
মূল্য /ফি/ চার্জ |
১। |
রেহেন দলিল |
১০০/- |
২। |
ঋণ আবেদন ফরম |
৫০০/- |
৩। |
এপার্টমেন্ট/ ফ্ল্যাট ঋণের আবেদন ফরম ( ফরমাল) |
১,০০০/- |
৪। |
জামিনদারের প্রশ্নপত্র ফরম ( জামিননামা ফরমসহ) |
১০০/- |
৫। |
সাধারন ঋণের আবেদন ফি ( প্রতি হাজারে ) |
৩/- |
৬। |
সাধারন ঋণের পরিদর্শন ফি ( প্রতি হাজারে ) |
৩/- |
৭। |
ফ্ল্যাট ঋণের আবেদন ফি ( প্রতি হাজারে ) |
৫/- |
৮। |
ফ্ল্যাট ঋণের পরিদর্শন ফি ( প্রতি হাজারে ) |
৫/- |
৯। |
হস্তামতর ফি |
৭,৫০০/- |
১০। |
ঋণ বিভাজন ফি ( প্রতিজনের জন্য ) |
৩,০০০/- |
১১। |
হস্তামতর ফরম |
২০০/- |
১২। |
২য় রেহেন অনুমতি |
২,৫০০/- |
১৩। |
বন্ধকী সম্পত্তির আংশিক অবমুক্তির আবেদন ফরম |
৫০০/- |
১৪। |
রেহেনাবন্ধ বাড়ী/ এপার্টমেন্ট বিক্রয়ের ত্রিপক্ষীয় দলিল |
৫০/- |
১৭.০ যে সমস্ত ঋণ গ্রহীতা ঋণের শেষ কিস্তি টাকা গ্রহণ করেননি তাদের ক্ষেত্রে শেষ কিস্তির চেক গ্রহণের সময় ৫০.০০ টাকা জমা দিলে ১টি ব্যাংক মেমো বইসহ ঋণ পরিশোধের উপদেশ পত্র দেয়া হবে। মেমো বইয়ের পাতা শেষ হওয়ার পর পুরানো বই দেখিয়ে বিনামুল্যে নতুন মেমো বই নেয়া যাবে। অন্যথায় নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে নতুন মেমো বই নিতে হবে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস